।। বাক্‌ ১২০ ।। সুপ্রিয় বন্দ্যোপাধ্যায় ।।




দ্বৈতাদ্বৈতবিনিশ্চয়

প্রথম উল্লাস  :  দ্বৈত



শূন্য

তোমাকে শূন্য দেওয়া হলো




এক

তুমি একটি চেতনা


ফল  : দ্বিধা
তুমি এক, তার পাশে শূন্য বসিয়ে দশমহাবিদ্যা হবে এবং অথবা রাবণ, নাকি একের আগে শুন্যকে রেখে এক-কে শ্রীমণ্ডিত করবে

দ্বৈত এখান থেকে শুরু



এক শূন্য

তুমি এক, আর শূন্য
তুমি শূন্যকে ধারণ করতে শেখো নি শূন্যকে ধারণ করা যায় না শূন্যকে পূর্ণ করা যায় তুমি শূন্যে বিহার করতে বাসো তুমি এক, শুন্য আর দ্বৈত সংসার



এক এক

তুমি এক, শূন্য আরএক
পাশাপাশি অথবা সাথে সাথে ক্রোমোজোমের সর্পিল গঠন



এক শূন্য শূন্য

তুমি এক, শূন্য একের অধিক
তুমি তোমার চেতনাকে সর্বত্র পাঠাও শূন্য তাতেও কুলোয় না অনেকটা ধরা যায় শূন্য অনেকটা ধরা যায়না শূন্য তুমি এক, প্রত্যক্ষ শূন্য, অপ্রত্যক্ষ শূন্য



এক এক এক

তুমি এক, শূন্য নির্দিষ্ট
গম্য অগম্য আঙ্গুল জলে খাবলায় জল আছে, ছোঁয়া পায় জল নেই, ধরা না যায়



এক শূন্য শূন্য শূন্য

তুমি এক, শূন্য গম্য, শূন্য অগম্য, শূন্য রহস্য
পাতালে মেঘ করেছে কাম্যকবনে তার ছায়া হবির্গন্ধে উদ্ভাসিত যজ্ঞবেদী সোম অভিযুত হয়েছে


এক শূন্য শূন্য এক

তুমি এক, শূন্য গম্যাগম্য, শূন্য রহস্যময়, তুমি দ্বৈত
তুমি এক শুন্যে বস্তুবাদী, সপ্তদ্বীপা পৃথ্বী মাপো, অপর শূন্যে রহস্যের দিকে তাকিয়ে থাকো, ছুঁতে চাও না, আলগা রাখো, 'আর কতো দূরে নিয়ে যাবে মোরে হে সুন্দরী' বলো যাকে, তার মুখের ওড়নাটুকু কখনোই সরে না


এক শূন্য এক শূন্য


তুমি এক, শূন্য কাব্য, এক জন্ম, শূন্য থেকে উদ্ভাস
যেন অন্তরীক্ষ থেকে উদ্ভাসিত হওয়া মন্ত্র দর্শন করেন মন্ত্রদ্রষ্টা এ কী হলো ! আহা, এ কী অপূর্বশাশ্বতী সমাঃ ...



এক শূন্য এক এক


তুমি এক, শূন্য কাব্য, তুমি একের অধিক, একাধার তত্ত্ব
এখনো কোনও ঋকমন্ত্র দর্শন করেননি যে ঋষিকুমার, তিনি আদরণীয় হলেও রাণী তাকে কন্যা দিতে চান না মন্ত্রদ্রষ্টা হতে হবে, নতুন ঋক সংযোজন করতে হবে, তবে ঋষিকুমার তাঁর প্রেমিকার সঙ্গে মিলিত হতে পারবেন

 বালি বয়ে যায় সঙ্গে
গতি মধ্য থেকে ধীর প্রসার বিশালা ক্রমে চর, বসতি অনিশ্চিত পাড় ভেঙে ভেঙে


এক এক শূন্য শূন্য


তুমি এক, জীবন এক, শূন্য কাব্য, শুন্য বাকি সব
আর কোনো কাজ নাই, সব ফেলে দিয়ে শুধু কবিতার জন্য এই জন্ম ...



এক এক শূন্য এক


তুমি এক, তত্ত্ব একাধার, শুন্য কাব্য, বিজ্ঞান একমাত্রিক
এইখানে পুঁতে দিলাম খুঁটি, মাথায় ধ্বজা যদি পৃথিবী ঘোরে, তার প্রমাণ দিক বেদী নির্মিত হয়, গভীরে থাকে হিসাব নবনাসিকা, আঙ্গুল গুণে কুড়ি, হাতের পাতায় ঘষে নেওয়া নিশাদল, সন্মোহনাস্ত্র ...


এক এক এক শূন্য


তুমি এক, একান্ত কাব্য, একমাত্রিক বিজ্ঞান, তুমি আত্ম
আত্মানং বিদ্ধি এলেম আমি কোথা থেকে কবে আমি বাহির হলেম হাজার বছর আমি পথ হাঁটিতেছি প্রকৃত সারস


এক এক এক এক


তুমি এক, এক পৃথিবীতুমি বিজ্ঞান, তুমি দর্শন
ভুট্টা পোড়ালে খেতে মিষ্টি মরচে ধরা লোহায় ধনুষ্টঙ্কার জোয়ার, বেঁধে ফেলেছি ভাটা, গুনে নিয়েছি জল চাইলে উঁচু, চাইলে নিচু কিসে কি হয়, জেনে যাচ্ছি ...

 তবু কী যেন বাকি রয়ে যায়
তবু কীসের আর্তি কী যেন হয়নি কী যেন হবার কথা ছিলো

 এই পৃথিবী, এক জীবনে পায়ে মাপা যায় তার কতোখানিই বাচরৈবেতি, চরৈবেতি ...



এক শূন্য শূন্য শূন্য শূন্য

তুমি এক, শূন্য কাব্য, শূন্য বিজ্ঞান, শূন্য দর্শণ, শূন্য তত্ত্ব
বড়ো মোহময় বুদ্ধির নেশা বিশ্ববাদ জিন্দাবাদ, তৈলাধার পাত্র কি পাত্রাধার তৈল, তোমার নাম আমার নাম, অহিংসা পরমো ধর্ম



এক শুন্য শুন্য শুন্য এক


শুন্য কাব্য, শুন্য বিজ্ঞান, শুন্য দর্শণ, শুন্য তত্ত্ব, শুণ্য পৃথ্বী, শুন্য রস -


রস
রসে বিলীন নুনের পুতুল সাগর মাপতে গেলে যা হয় মিশে গিয়ে হারিয়ে গেল টইটম্বুর বিজ্ঞান মিশে গেছে দর্শন ডুবে গেছে তত্ত্ব নেই গম্য নেই অগম্য নেই রহস্য নেই


তুমিও নেই
  এই যে নেই 'তুমি' এখন জানো কিভাবে সেই আহিরীণি কেঁদেছিলো সুখে ও অসুখে, কিভাবে সেই গোপিনীদল রাসরঙ্গে মাতোয়ারা হয়েছিলো, কীভাবে এক বিশাল মাপের পুরুষ এসে বললেন -- নন্দের নন্দন কৃষ্ণ মোর প্রাণনাথ...


কৃষ্ণ তবুও মথুরায় যাবেই
মথুরা অপেক্ষায়





তবু যেতে দিতে হয়, তবু চলে যায়



প্রথম উল্লাস সমাপ্ত
যাত্রীগণ, আপনারা সাফল্যের সঙ্গে প্রথম উল্লাস পেরিয়ে এসেছেন পরবর্তী স্তরে যেতে প্রস্তূত? সিটবেল্ট বেঁধে নিন ]

No comments:

Post a Comment