কয়েকটি মৃত্যুর বারোচন্দ্র
১.
আরাফাত সেনের অংক পুস্তকের 'এক' এর
সঙ্গে রঞ্জিত রহমানের অংক বইয়ের 'এক' এর
বিরোধ তুমুল । সেন ও হোসেন এর মধ্যস্থতাকারী রূপে দাঁড়ানো 'শূন্য'
। দুইটা 'এক' মিলে শূন্যকে
হাওয়ায় মিলিয়ে দিল।
প্রার্থনা অভিন্ন তাদের, ভঙ্গিমা বিচিত্র ।
২.
যে ট্রেন উভয় যাত্রীই মিস করল, সে যাত্রার মৃত্যু নাই।
জংশন
বিপুল সমারোহ ।
৩.
লোকটা চতুর্দিক থেকে মরলো। এমনভাবে মরেছিলো, প্রিয়জনদের মিলনমেলা উৎসবে
আমেজ নিলো।
লোকটা আরও মারা গেল।
৪.
মশারী ঘরে অনেক মশা নিয়ে বিদ্যুৎ ঘোষ ঘুমিয়ে
গেল । ম্যালেরিয়াবাহী মশা উন্মুখ বেরোতে চেয়ে চেয়ে। অগত্যা শায়িতার রক্তে
ম্যালেরিয়া গুজে দিল।
আকাশে বিদ্যুৎ চমকালো, বিদ্যুৎ ঘোষ ঘরেই মরে পড়ল ।
৫.
মানুষ মরে গেলে অনেক দাঁত উদ্ধার করা যায়
লাশের গন্ধ থেকে ।
হৃদয়ে হরেক পদচিহ্ন।
৬.
সারাদিন প্রজাপতি ছিল, সন্ধ্যাবেলা ফিনিক্স পাখির
রূপে ফগ লাইটে ঝাঁপিয়ে পড়ল।
৭.
বিষাদের দাঁত খিচিয়ে উঠলে যেকোন লোককে প্রজা
জ্ঞান করে বসিয়ে দেয়া যায় । 'বিষাদ' থেকেই 'বিষ'
- এমন যাবতীয়।
৮
আয়ু ততক্ষনই, যতক্ষন না মরে যায়
সময়ের তছনছ যৌবন যতটা তসনস্য
ভেজা বালিশের ভেতর মুখ, তপ্ত বালুর--
ভেতরে পাগুলো কেমন স্বচ্ছ আর উজবুক,
ছাড়া ছাড়া
৯
পাতা-নাই-ডালে আগুন। বৃষ্টি নামার তলে আগুন--
মরে গেল। আগুন মরলে থাকে কি আর ?
১০.
শুনেও না শোনার ভান, হয় না। অহংকারী হওয়ার চেষ্টা,
বেমানান । সজোর আঘাত করতে গেলে পা আটকে যায় । মিথ্যা বলতে চাইলেও
ধরা ।
শুধু গো, প্রবল আত্ননাশি হবার চেষ্টা ঠেকাতে পারিনা।
১১.
জন্মেই ধীর বিষ পান করে নিয়েছো। ধীরে, গম্ভীরে-- শুক্রবার শুক্রবার
মারা যাচ্ছো ।
১২.
মৃত্যু এমন এক অধ্যবসায়, যা নিয়ে 'জীবনের লক্ষ্য' শিরোনামে রচনা লেখা গেল ।
লিনচিং
:::
এই যে বিরান মরুমাঠ, তার ভেতর-চেরা ফাঁকা পথ--
হাত পা ছেড়ে নির্ভার পড়ে থাকা একান্ত আমার । নিজের স্বত্ত্বে কেউ অশ্লীল বকে যাক,
কেউ ছুঁয়ে যাক, চুমিয়ে যাক কেউ, গাড়ি থামিয়ে থু থু রেখে যাক কতিপয়, কেউ কেহ এসে ছাল
চামড়া খুলে নিয়ে যাক চামড়াজাত কারখানায় । চোখের গর্ত ঠুকরিয়ে কাঠঠোকরা বহুদিনে গড়া
দৃষ্টিভঙ্গি তুলে নিক । শকুন নেমে আসুক, কুকুর উঠে আসুক,
আসুন শেয়াল-শৃগাল । একপক্ষ পা ছিঁড়ে নিয়ে যাক, আরেকপক্ষ হাত খুলে নিতে টানবে খুব ।
এইভাবে খেতে থাক, ছোট হবনা ঠিক-- যতেক শিশু
হব। যেহেতু নবজাতক শিশুদের ওজন, মাংস, শরীরের
দৈর্ঘ-প্রস্থ বড়দের তুলনায় যৎসামান্য, এমনকি চোখও ফোটেনা ।
কি আছে ? আধখাওয়া দৈহিক জীবনের একাংশকে বীজরূপ দিয়ে
এক মাসের চারা থেকে শুরু করব আবার ।
স্থির, কম্পন কর
::
মরমের দ্বিধাভূমে অদার্শনিক ওঠানামা থাকলে
কোনো কিছুই ব্যাপারনা ফের সবকিছুই ব্যাপার হয়ে উঠছে। আবার নামছে।
অর্থাৎ কোন কিছুই কচু না, সব গাছই কচুলতা হয়ে উঠছে।
চুলকাচ্ছে।
.
কলবের মেলাভূমে মনগুলো এক বেঘোর শিল্পপাড়া, শিল্প'র
সমার্থ ইন্ডাস্ট্রি, ইন্ডাস্ট্রি অর্থ শিল্প, পটভূমে কারখানা। যা যা উৎপাদন করছ হে সওদাগরপুত্র, চেয়েছোই
কিবা ফুটো আনা আনা। ফুটো পয়সার উত্তাপে প্রচন্ড হিমচূড়ায়ও দাঁড়াতে পারছো না । তুমি
নাচ বেচো, গান বেচো, জায়গা কেনো
কবিতার। কবি কিনে নিয়ে যাও কবিতাপুর।
কবির সঙ্গে মাছ ধরার দৃশ্য কেনো। প্রত্যেহ
দাস ক্যাপিটাল পাঠ করে স্টক এক্সচেঞ্জে চাকুরী কর। তুমি ভাল, তুমি অসাধারণ। তুমি একলা
কবির পাশে অথৈ প্রেমিকা ।
কা। কা। কা।
দ্যাখো, স্কুপ পকেটের ভেতর থেকে তিনটি কাক উড়ে গেল।
তারা নাগরিক। স্বাভাবিক। তারা সৌন্দর্যপিপাসু ও সৌন্দর্যকর্মীর মাথায় হিসুরাগ।
.
ভৈরবী দ্যোতনা আছে, নাই এক, দুই, তিন তারা। একটা গান ধর..
কোন কিছুই স্থির না জেনেও কম্পন কর।
No comments:
Post a Comment