কথোপকথন
অমিতাভ মৈত্র ও অনুপম মুখোপাধ্যায়
চতুর্থ পর্ব
অনুপম মুখোপাধ্যায় - কবিতার ভাষা নিয়ে বিগত কয়েক দশকে রীতিমতো ভাবনা চিন্তা হচ্ছে। খোলনলচে বদলে তৈরী করা হচ্ছে কবিতার উপযোগী নতুন ভাষা। নতুন নতুন শব্দ তৈরী করা হচ্ছে... আপনারই সবময়সী
কবিরা যখন এইসব কাজ করছেন, আপনি কিন্তু সে খেলায় মাতলেন না। ভাষাবদল, নতুন কবিতা
ইত্যাদির কোনো স্পর্শ লাগল না আপনার পিপাসার গায়ে।
অমিতাভ মৈত্র- যে বিপুল ভাষা ঘিরে আছে,অজস্র সংকেত বিনিময় হয়ে যাচ্ছে ধূলোকণা,আলো,জল অথবা গাছের পাতায় শিরায় শিরায়-মাঝরাতের একা একটি তারা যেভাবে নিঃশব্দে কথা বলছে রাস্তায় বসে থাকা একটা বেড়ালের সাথে-আমার বাড়ির পাশের গাছগুলোয় রাত আড়াইটেয় প্রতিদিন অনেক পাখি এক মুহূর্তেরর জন্য সমস্বরে ডেকে উঠে চুপ করে যায়(কোন্ ম্যাকবেথ হত্যা করে যায় তাদের ঘুমকে!)-আমরা কবিতায় হয়তো সরাসরি আনতে পারিনা এদের,কিন্তু তার সুক্ষ্ম ইঙ্গিত তো আনার চেষ্টা করতে পারি!কবিতা তো আমাদের ডান পাঁজরে বল্লমের ক্ষত,পাতা কেটে নেওয়া চোখ,হাতের চেটো ভেদ করে চলে যাওয়া কীলক।ভাষার এক বিশেষ ভঙ্গির নেভা মোমবাতি নিয়ে,কোনো উত্তেজক ধাতুপিণ্ড খোঁজার মধ্যে কবিতাকে কি পাওয়া যাবে?উন্মাদের মতো আমরা সবাই তবু সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।ভোতা নখে দাগ রাখার চেষ্টা।প্রত্যেক কবি যেন বয়ে বেড়াচ্ছেন অতীত এবং সমসময়ের নানারকমের কবিতার এক ভারি শরীর।ঐতিহ্য,পুরনো বাকরীতি, ভাষা,বাকপ্রতিমা ও ছন্দস্পন্দ ফিরে আসছে কারো কারো কবিতায়।তাঁরা সচেতন ভাবে অন্য একটা অভিমুখে যেতে চাইছেন এভাবে।
অমিতাভ মৈত্র- যে বিপুল ভাষা ঘিরে আছে,অজস্র সংকেত বিনিময় হয়ে যাচ্ছে ধূলোকণা,আলো,জল অথবা গাছের পাতায় শিরায় শিরায়-মাঝরাতের একা একটি তারা যেভাবে নিঃশব্দে কথা বলছে রাস্তায় বসে থাকা একটা বেড়ালের সাথে-আমার বাড়ির পাশের গাছগুলোয় রাত আড়াইটেয় প্রতিদিন অনেক পাখি এক মুহূর্তেরর জন্য সমস্বরে ডেকে উঠে চুপ করে যায়(কোন্ ম্যাকবেথ হত্যা করে যায় তাদের ঘুমকে!)-আমরা কবিতায় হয়তো সরাসরি আনতে পারিনা এদের,কিন্তু তার সুক্ষ্ম ইঙ্গিত তো আনার চেষ্টা করতে পারি!কবিতা তো আমাদের ডান পাঁজরে বল্লমের ক্ষত,পাতা কেটে নেওয়া চোখ,হাতের চেটো ভেদ করে চলে যাওয়া কীলক।ভাষার এক বিশেষ ভঙ্গির নেভা মোমবাতি নিয়ে,কোনো উত্তেজক ধাতুপিণ্ড খোঁজার মধ্যে কবিতাকে কি পাওয়া যাবে?উন্মাদের মতো আমরা সবাই তবু সেই চেষ্টা করে যাচ্ছি।ভোতা নখে দাগ রাখার চেষ্টা।প্রত্যেক কবি যেন বয়ে বেড়াচ্ছেন অতীত এবং সমসময়ের নানারকমের কবিতার এক ভারি শরীর।ঐতিহ্য,পুরনো বাকরীতি, ভাষা,বাকপ্রতিমা ও ছন্দস্পন্দ ফিরে আসছে কারো কারো কবিতায়।তাঁরা সচেতন ভাবে অন্য একটা অভিমুখে যেতে চাইছেন এভাবে।
কিন্তু কখনও কখনও যখন মাত্রাতিরিক্ত ভাবে প্রধান হয়ে ওঠে এই প্রবণতা,ছোটোখাটো কিছু সমস্যা আসে।যেমন- ভারি জড়োয়া গহনার মতো আড়ম্বরপূর্ণ ভাষা কবিতাটিকে স্লথ করে দেয়।
একধরনের নান্দনিক অবসাদ তৈরি হতে পারে পাঠকের মধ্যে এই অপ্রচল মন্থর ভাষার কারণে।এই ভাষা তো তাঁর স্বাভাবিক শ্বাসের জন্য নয়।শুধু এই ভাষার জন্য কোনো কোনো কবিকে "ধ্রুপদী"ঘরাণার চিহ্ন দেওয়া হয়-যেটা ভুল।যেমন কেউ কেউ বলে থাকেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত কে।
একধরনের নান্দনিক অবসাদ তৈরি হতে পারে পাঠকের মধ্যে এই অপ্রচল মন্থর ভাষার কারণে।এই ভাষা তো তাঁর স্বাভাবিক শ্বাসের জন্য নয়।শুধু এই ভাষার জন্য কোনো কোনো কবিকে "ধ্রুপদী"ঘরাণার চিহ্ন দেওয়া হয়-যেটা ভুল।যেমন কেউ কেউ বলে থাকেন সুধীন্দ্রনাথ দত্ত কে।
আমি খুব সহজভাবে যেটা বুঝি,একটি কবিতা যদি আনপুটডাউনেবল্ না হয়,পড়তে পড়তে যদি আনন্দ আর বিস্ময় না জেগে ওঠে পাঠকের মধ্যে,তাহলে সেখানে একধরনের রিক্ততা চলে আসে।কবিতা তো একধরনের সম্পর্ক,পাঠকের সাথে।আর সেই সম্পর্ক প্যাশনের,তীব্র উচ্ছ্বাসের। হ্যাঁ,এই উচ্চতা বাস্তবে সম্ভব নয়,কিন্তু যিনি লিখছেন তাঁর অভীষ্ট তো এই চূড়ান্ত বিন্দুটিকে ছোঁয়া।
অনুপম - কিন্তু বাস্তবে কি এটা সম্ভব?এটা কি চূড়ান্ত আদর্শগত একটা অবস্থান নয়? এই যে দেখতে পাচ্ছি এক কবির
ভাষা আরেক কবির ভাষায় অনায়াসে ঢুকে যাচ্ছে, বেরিয়ে আসছে। আমি নিজে আমার কবিতায়
পূর্ণচ্ছেদের অদ্ভুত ব্যবহারটা করেছি প্রয়াত মঞ্জুষ দাশগুপ্তর ‘অন্ধকার, অন্ধ নয়’
কাব্যগ্রন্থ (১৯৯৫) থেকে। সেটা স্বীকার করেছি, অন্যথায় এই ব্যবহারের মূল্য থাকত
না, বরং অনৈতিক হয়ে উঠত। কবিতার ভাষার ব্যাপারে একটু পিউরিটানিজম আমার আছে। এক
কবির আবিষ্কৃত অস্ত্র যেন আরেক কবি হাতিয়ে না নেয়, যেন একজন যোগ্য কবিকে
নিকুম্ভিলা যজ্ঞ শেষ হওয়ার আগেই নিরস্ত্র মরতে না হয়, এটুকু আমি চাই। আপনার কবিতার
ভাষা এই সময়ে বেশ কিছু কবিকে, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সংক্রমিত করেছে। সেটা দেখতে
পাই। আপনাকে নিয়ে গদগদ হতে অনেককেই দেখি। কিন্তু ঋণ স্বীকার দেখতে পাই না। তখন মনে
হয়, তবে কি আমারও প্রয়োজন ছিল না মঞ্জুষ দাশগুপ্তর কাছে ঋণ স্বীকারের? আমি যদি
বলতাম আমিই ওভাবে পূর্ণচ্ছেদ দিয়েছি, বাংলা কবিতায় প্রথম, সেটাই কি বুদ্ধিমানের
কাজ হত? চুরি বলে কি কিছু নেই? এই যে পিইউরিটানিজম আমার, সেটা মনে হয় রাশিচক্রের
দোষ। ঘাড়ে শনি আছেন তো। গোঁড়া সন্ন্যাসী উনি... হাঃ হাঃ হাঃ... কিন্তু প্রশ্নটা
রয়েই যায়। কবিতার উপরে কি কবির নাম রাখা যায় আদৌ?
অমিতাভ - ঠিক। কিন্তু আমার টার্গেট অর্থাৎ যেখানে আমি পৌঁছতে চাই,তাকে এক অসম্ভব,অপ্রাপ্য উচ্চতায় না রাখলে আমার একাগ্রতা কমে যাবে।আমি সুখী হতে থাকব।নরম কেক এ আলতো কামড়-এটাই মনে হবে যথেষ্ট।তীব্রতা যেন এমন থাকে যে দাঁতের চাপে ঠোঁটের মাংস কেটে রক্ত বের হলেও,অগ্রাহ্য করা যায় তাকে।থিওকে লেখা ভ্যান গখ্ এর চিঠিগুলো বারবার পড়তে ইচ্ছে করে এজন্যই।নিজেকে জাগ্রত আর নিযুক্ত রাখার,কী উন্মাদ মরিয়া চেষ্টা সেখানে!পড়তে পড়তে বোঝা যায় কী Dizzing tininess-কী মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ক্ষুদ্রত্ব নিয়ে বেঁচে আছি আমি!অনুপম,যতদিন আমার হাত,পা,চোখ,এর সাথে সাথে কোনো ঝিঁঝির ডাক,কোনো সাপের নিঃসাড় চলে যাওয়া-এর সবকিছু অক্ষর আর যতিচিহ্ন বলে, বিরাট কোনো উক্তির অংশ বুঝতে না পারব,কিভাবে লিখতে পারব আমি?!
অমিতাভ - ঠিক। কিন্তু আমার টার্গেট অর্থাৎ যেখানে আমি পৌঁছতে চাই,তাকে এক অসম্ভব,অপ্রাপ্য উচ্চতায় না রাখলে আমার একাগ্রতা কমে যাবে।আমি সুখী হতে থাকব।নরম কেক এ আলতো কামড়-এটাই মনে হবে যথেষ্ট।তীব্রতা যেন এমন থাকে যে দাঁতের চাপে ঠোঁটের মাংস কেটে রক্ত বের হলেও,অগ্রাহ্য করা যায় তাকে।থিওকে লেখা ভ্যান গখ্ এর চিঠিগুলো বারবার পড়তে ইচ্ছে করে এজন্যই।নিজেকে জাগ্রত আর নিযুক্ত রাখার,কী উন্মাদ মরিয়া চেষ্টা সেখানে!পড়তে পড়তে বোঝা যায় কী Dizzing tininess-কী মাথা ঘুরিয়ে দেওয়া ক্ষুদ্রত্ব নিয়ে বেঁচে আছি আমি!অনুপম,যতদিন আমার হাত,পা,চোখ,এর সাথে সাথে কোনো ঝিঁঝির ডাক,কোনো সাপের নিঃসাড় চলে যাওয়া-এর সবকিছু অক্ষর আর যতিচিহ্ন বলে, বিরাট কোনো উক্তির অংশ বুঝতে না পারব,কিভাবে লিখতে পারব আমি?!
সারাদিন এক ছোট্ট গাছের চারার দিকে নির্নিমেষ তাকিয়ে থেকে,তার ছোট্ট পাতার শিরায়,নিজেকে আছড়ে ফেলতে না পারি যদি,তার শীর্ণ কান্ডের ভেতর দিয়ে মাটি থেকে উঠে আসা কালের জলের গতি যদি দেখতে না পাই আর দেখাতে না পারি তাহলে আমার লেখা কেন পড়বে তুমি!
আচ্ছা এই যে "আমার লেখা" বললাম-এটা কি সত্যিই গভীর কিছু বোঝায়? কবিতায় দাঁড়ি,কমা,লিডার,স্পেস-এর সবকিছুই কবিতাটিকে পূর্ণতা দেয়।কিন্তু কবির নাম থাকার কোনো অর্থ নেই সেখানে।কবিতায় সবথেকে অবাঞ্ছিত উপস্থিতি কবির নাম এর।কবির নামের চিরকালীন উপদ্রবটি কবিতাকে সহ্য করতে হয়।এখন একটা সময় হয়তো আসবে কখনও,যখন কবির নাম আর জ্বলজ্বল করবেনা কবিতায়।ভূতগ্রস্ত যেসব মানুষ ভিড়ের ট্রেনে,বাসে,রাস্তায়,মাথার মধ্যে ঝিলিক দিয়ে ওঠা কোনো কবিতার অংশ বা লাইন নিয়ে ঘুরে বেড়ান,তাঁদের কি অনিবার্যভাবে তখন মনে পড়ে কবির নাম? এবং নামটির অভাবে কি কাঁচুমাচু অপ্রস্তুত মুখে দাঁড়িয়ে,পড়ে কবিতাটি?
আচ্ছা এই যে "আমার লেখা" বললাম-এটা কি সত্যিই গভীর কিছু বোঝায়? কবিতায় দাঁড়ি,কমা,লিডার,স্পেস-এর সবকিছুই কবিতাটিকে পূর্ণতা দেয়।কিন্তু কবির নাম থাকার কোনো অর্থ নেই সেখানে।কবিতায় সবথেকে অবাঞ্ছিত উপস্থিতি কবির নাম এর।কবির নামের চিরকালীন উপদ্রবটি কবিতাকে সহ্য করতে হয়।এখন একটা সময় হয়তো আসবে কখনও,যখন কবির নাম আর জ্বলজ্বল করবেনা কবিতায়।ভূতগ্রস্ত যেসব মানুষ ভিড়ের ট্রেনে,বাসে,রাস্তায়,মাথার মধ্যে ঝিলিক দিয়ে ওঠা কোনো কবিতার অংশ বা লাইন নিয়ে ঘুরে বেড়ান,তাঁদের কি অনিবার্যভাবে তখন মনে পড়ে কবির নাম? এবং নামটির অভাবে কি কাঁচুমাচু অপ্রস্তুত মুখে দাঁড়িয়ে,পড়ে কবিতাটি?
একদিন হয়তো কবিদের নাম অন্তরালে চলে যাবে।তখন নিজের শক্তিতে পাঠকের সামনে দাঁড়াবে কোনো কবিতা।বিচ্ছিন্নভাবে তার কিছু কিছু উদ্যোগ চোখে পড়ছে।বছর পনেরো আগে ছান্দার এ কবিতাপাক্ষিক যৌথ কবিতা রচনার একটি কর্মশালা আয়োজন করেছিল,যেখানে সারিবদ্ধভাবে বসে থাকা কবিদের হাতে হাতে দ্রুত ঘুরে যাচ্ছে একটি খাতা।পাশের কবির থেকে খাতাটি তুলে নিচ্ছেন কোনো কবি।আগের লেখাগুলি পড়ে নিচ্ছেন।ভেবে নিচ্ছেন দুয়েকটি লাইন।আর এভাবেই লেখা হচ্ছে অনেক কবির হাতে নামচিহ্নহীন কয়েকশো লাইনের এক দীর্ঘ কবিতা-কবিদের মুখ সেখানে নিশ্চিহ্ন,শুধু কবিতাটি জেগে আছে।পরে যখন ছাপা হয় সেই কবিতাটি,দেখেছি কবিদের নাম না থাকার জন্য কোনো অসুবিধে তো হচ্ছে না,বরং অন্যরকম এক ফ্লেভার তৈরি হচ্ছে এভাবে।
এবার একটা মজার প্রসঙ্গ, আর এই প্রসঙ্গ তোমার জানা।তুমি নিজেও একটু মজা শেয়ার করেছিলে আমার সাথে এই বিষয়ে।"পিয়ানোর সামনে বিকেল"এ একটা নাম প্রোটাগনিস্টের মর্যাদা নিয়ে হাজির ছিল-ক্রিস্টোফার।তো,এই কবিতাগুলো যখন ক্রমাগত ছাপা হচ্ছিল তখন আমার স্নেহভাজন এবং প্রিয় কবি ইন্দ্রানী দত্ত পান্না বিভিন্নসময়ে নানা প্রশ্ন করতো লেখাগুলি নিয়ে।যেখানে পড়তো লেখাগুলো,সঙ্গেঁ সঙ্গেঁ কথা বলতো বিস্তারে।জানতে চাইতো-ক্রিস্টোফার কে? স্বভাবসিদ্ধ মজা করে বলার ইচ্ছে হলো-যা বলতেন বেকেট যখন তাঁকে প্রশ্ন করা হতো"গোডো কে?"যদি জানতাম সে কে,লেখালিখির আর চেষ্টা করতাম না।"আমিই ক্রিস্টোফার"- বললাম ইন্দ্রানীকে। ক্রিস্টোফার নামটা হঠাৎ পেয়ে যাই মার্ক হ্যাডন এর "The curious Incident of the Dog in the
night-time."নামের একটি শিশুদের জন্য লেখা উপন্যাসে।বালক ক্রিস্টোফার ছিল সেখানে প্রধান চরিত্র।তার স্মৃতিশক্তি বিস্ময়কর,প্রায় অজাগতিক।অঙ্ক ও বিজ্ঞানে সে প্রখর মেধাবী।গাড়ি চাপা পায়ে মৃত এক কুকুরের হত্যাকারী সন্ধান করতে করতে যে সব অভিজ্ঞতা হয় ক্রিস্টোফারেরর সেটাই উপন্যাসের বিষয়।
আমার "পিয়ানোর সামনে বিকেল"এর কাছাকাছি সময়েই বেরোলো ইন্দ্রানীর"ক্রিস্টোফার ক্রিস্টোফার"।ইন্দ্রানী জানিয়েছিল আমার ক্রিস্টোফারের সাথে একধরনের"ডায়লগ"হবে তার বইয়ের বিষয়।মানে,আমি হয়তো লিখলাম "থামো ক্রিস্টোফার"।আর ইন্দ্রানী হয়তো লিখল,"থেমোনা ক্রিস্টোফার,চলো।"-এইরকম।
ইন্দ্রানীর সাথে মণীন্দ্র গুপ্ত/দেবারতি মিত্রর নিয়মিত যোগাযোগ ছিল।আমার বই বেরোনোর বছর দুই পরে একদিন কথা হলো ইন্দ্রানীর সাথে,যে ও আমাকে মণীন্দ্র গুপ্তর বাড়ি নিয়ে যাবে যাতে আমার বইটি আমি দিতে পারি ওঁদের।গেলাম একদিন।কথা বলছিলাম মণীন্দ্র গুপ্তর সাথে।অতোটা বয়সেও কী প্রবল জীবনতৃষ্ণা!
"পিয়ানোর সামনে..."পড়েছিলেন দেবারতি দি নিবিষ্টভাবে।হঠাৎ বলেন-"অমিতাভ আপনি তো অনেকদিন লিখছেন।ইন্দ্রানী ক্রিস্টোফার নিয়ে বই করে ফেলেছে।ওর দেখাদেখি আপনার কবিতাতেও ক্রিস্টোফার আসবে কেন? ইন্দ্রানীও ছিল সেখানে।ও তখন বুঝিয়ে দিল যে "পিয়ানোর সামনে"র ক্রিস্টোফারের সাথে ওর কথাবার্তা ধরা আছে ওর বইয়ে।চুরির দায় থেকে আমিও বাঁচলাম!হা হা!
এবার,ধরো যদি আমাদের দুজনের কারো লেখাতেই আমাদের নাম না থাকত,তাহলে হয়তো দুজনের লেখা মিলেমিশে আরো একটু সম্পূর্ণতা পেত লেখাগুলি।হতে কি পারে না এমন,অনুপম?
No comments:
Post a Comment